- চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়রের নামে থাকা হিসাব নম্বরে দেওয়া চেক আত্মসাৎ
- তিন ব্যাংক কর্মকর্তা ও এক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা সুমন মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
- ব্যাংক কর্মকর্তারা চেকের টাকা সুমন মিয়ার হিসাবে জমা করে আত্মসাৎ করেন
- এভাবে আত্মসাৎ করা হয় ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
- দায়িত্বে অবহেলার কারণে চসিকের তিন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়রের নামে থাকা হিসাব নম্বরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া চেক জমা করার কথা থাকলেও তা না করে আরেকটি হিসাব নম্বরে জমা করে ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে দুদকের অভিযোগ।
এ ঘটনার তদন্ত শেষে অগ্রণী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার তিন ব্যাংক কর্মকর্তাসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন অগ্রণী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার সাবেক কর্মকর্তা রফিক উদ্দিন কোরাইশী, প্রিন্সিপাল অফিসার শুভম দেওয়ান ও গাজী আরিফুর রহমান এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা সুমন মিয়া।
এই ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার কারণে চসিকের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (বিল) আশুতোষ দে এবং হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (বাজেট) মাসুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে দুদক অভিযোগপত্রে।
দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক ফয়সাল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, সিটি করপোরেশনের মেয়রের নামে থাকা হিসাব নম্বরে জমা করার কথা থাকলেও তিন ব্যাংক কর্মকর্তা তা করেননি। আরেকটি হিসাব নম্বরে জমা করে ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তাঁরা। এ জন্য তিন ব্যাংক কর্মকর্তাসহ চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার কারণে সিটি করপোরেশনের তিন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর সিটি করপোরেশনের হিসাব নম্বরে ৮৭ লাখ টাকা জমা না করে আত্মসাৎের অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখার সাবেক কর্মকর্তা রফিক উদ্দিন কোরাইশীকে আসামি করে মামলা করে দুদক।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৫ সালের ১৮ মার্চ সুমন মিয়ার নামে অগ্রণী ব্যাংক নগরের আগ্রাবাদ শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলা হয়। ব্যাংক কর্মকর্তা রফিক উদ্দিন কোরাইশী চসিকের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবের চেক জমা না দিয়ে সুমন মিয়া নামের ওই ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে জমা করতেন। এরই ধারাবাহিকতায় রফিক উদ্দিন বিভিন্ন তারিখে মেয়র, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অনুকূলে জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা-জাইকার সোনালী ব্যাংক হিসাব থেকে ইস্যু করা ৪১টি চেক করপোরেশনের হিসাবে জমা করেননি। এগুলো সুমন মিয়ার হিসাবে জমা দিয়ে ২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন ঠিকাদারের দেওয়া আরও আটটি চেকের ৯৯ লাখ টাকা একইভাবে তুলে নেওয়া হয়। ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে এই টাকা ভাউচার পরিবর্তন করে করপোরেশনের হিসাব শাখায় জমা না করে আরেকটি হিসাবে জমা হলেও করপোরেশনের হিসাব শাখার গাফিলতি ছিল। বিষয়টি তারা যথাযথভাবে তদারকি করেনি। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার সুপারিশ করেছে দুদক।