- সিলেটের শেষ টি-টোয়েন্টির পর চট্টগ্রামেও রিশাদের দাপট।
- ১৮ বলে অপরাজিত ৪৮ রানের ঝোড়ো ইনিংসে বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে ৪ উইকেটের জয়, সেই সঙ্গে সিরিজ জয়ও।
- এক ম্যাচে পাঁচজনের চোট, মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাঁদের তিনজনকেই।
- কনকাশন বদলি হিসেবে নামা তানজিদ হাসান তামিমের ৮১ বলে ৮৪ রান।
- ওয়ানডেতে কনকাশন বদলি হিসেবে নেমে তামজিদের ৮৪ রান সর্বোচ্চ।
- রিশাদের ৪৮ রানের ৪০–ই এসেছে শ্রীলঙ্কার লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গার ১১ বল থেকে।
- একই ওয়ানডেতে একই বোলারকে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ড এখন এটাই।
- বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে শ্রীলঙ্কার আর কোনো ব্যাটসম্যানই সেভাবে দাঁড়াতে পারেননি।
- জানিথ লিয়ানাগের অপরাজিত ১০১ রানের ইনিংসটাকে বলা যেতে পারে হাইলাইট।
- ৪২ রানে ৩ উইকেট নেওয়া তাসকিন আহমেদের কথাটা আলাদা করেই বলতে হয়।
- ফটোসেশনের সময় মুশফিকুর রহিমের দুষ্টুমিতে ফুটে ওঠা ইঙ্গিতটা স্পষ্ট।
রিশাদ হোসেন মানে শুধু একজন লেগ স্পিনারই নন, রিশাদ হোসেন মানে ব্যাট হাতে ঝড়। সিলেটে শেষ টি–টোয়েন্টির পর কাল চট্টগ্রামে আরও একবার সেটাই দেখলেন সবাই। রিশাদের মাত্র ১৮ বলে অপরাজিত ৪৮ রানের ঝোড়ো ইনিংস ৯.৪ ওভার বাকি থাকতেই বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে ৪ উইকেটের জয়, সেই সঙ্গে সিরিজ জয়ও।
এক ম্যাচে পাঁচজনের চোট, মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাঁদের তিনজনকেই। জাকের আলী গেলেন হাসপাতাল পর্যন্ত। সৌম্য সরকারকে ড্রেসিংরুমে বসিয়ে ব্যাটিংয়ে নামাতে হলো কনকাশন বদলি তানজিম হাসান তামিমকে। মোস্তাফিজুর রহমান পরে আর ব্যাটিংয়ে নামতে পারতেন কি না, তা অবশ্য বোঝা যায়নি তার আগেই বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার ২৩৫ রান টপকে যাওয়ায়।
কনকাশন বদলি হিসেবে নামা তানজিদ হাসান তামিম যদি তাঁর ইনিংসটা তিন অঙ্কে নিতে পারতেন, তাহলে আরও বেশি ভালো হতো। তবে শ্রীলঙ্কার ২৩৫ রানের জবাবে বাংলাদেশকে জয়ের পথে নিয়ে গেছে ৪ ছক্কা আর ৯ বাউন্ডারিতে তাঁর ৮১ বলে ৮৪ রানই।
ম্যাচের শেষ দৃশ্যে রিশাদ যেটা করলেন, সেটাকে নাটক না বলে ‘শো’ বলাই ভালো—‘রিশাদ শো।’ দলের ১৭৮ রানের মেহেদী হাসান মিরাজের ষষ্ঠ উইকেটটি যখন পড়ল, বাংলাদেশের ইনিংসের তখন ৩৬.১ ওভার। ম্যাচটা বাংলাদেশ জিতবেই, সেটা বলার উপায় ছিল না তখন। অথচ সেখান থেকেই কিনা মাত্র ৩ ওভার ১ বলের মধ্যে বাংলাদেশ বাকি দূরত্ব পাড়ি দিয়ে ফেলল!
রিশাদের ওই বিধ্বংসী ইনিংসই জয়টা সহজ করে দেয় বাংলাদেশের। ৫ বাউন্ডারি আর ৪ ছক্কার ইনিংসে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার করা ৪০তম ওভারের প্রথম দুই বলেই রিশাদ মেরেছেন পরপর দুই ছক্কা, পরের তিন বলে তিন চার। স্লগ সুইপে কাউ কর্নার আর মিড উইকেট দিয়ে মারা দুটি ছক্কা-ই গিয়ে পড়েছে গ্যালারিতে। ২৪ রান আসে ওই এক ওভারেই।
বাংলাদেশের ফিল্ডারদের চোটে পড়ার বাইরে শ্রীলঙ্কার ইনিংসের হাইলাইটস বলতে পারেন জানিথ লিয়ানাগের অপরাজিত ১০১ রানের ইনিংসটাকে। চট্টগ্রামের ব্যাটিং উইকেটেও বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে শ্রীলঙ্কার আর কোনো ব্যাটসম্যানই সেভাবে দাঁড়াতে পারেননি।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ মানেই এখন বাড়তি কিছু। কখনো নাগিন ড্যান্স, কখনো টাইমড আউট বিতর্ক, কখনোবা অন্য কিছু নিয়ে উত্তেজনা। তাসকিন–তামিম–রিশাদরা কাল সে রকম কোনো সুযোগই রাখলেন না। তবে ট্রফি নিয়ে ফটোসেশনের সময় হেলমেট হাতে নিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে মুশফিকুর রহিমের দুষ্টুমিতে ফুটে ওঠা ইঙ্গিতটা স্পষ্ট। শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পর শুধু ট্রফিতেই এখন আর পুরো আনন্দটা আসে না। সঙ্গে ও রকম একটু ‘সস’ও যোগ করতে হয় বোধ হয়।