ঢাকার বায়ু দূষণের কারণে শ্যামলী টিবি হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি

  • শ্যামলী টিবি হাসপাতালের বহির্বিভাগে দৈনিক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৫০০।
  • বায়ু দূষণের কারণে শ্বাসকষ্টের রোগী বেড়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
  • ঢাকার বায়ুদূষণের গড় মান গত বছরের চেয়ে বেড়েছে শতকরা ২ দশমিক ১৭ ভাগ।
  • বায়ুদূষণের প্রধান উৎস অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা (পিএম ২.৫)।
  • আন্তসীমান্ত দূষিত বায়ুপ্রবাহ এবং স্থানীয় উৎস দুটোই ঢাকার দূষণে ভূমিকা রাখছে।
  • ঢাকার দুই সিটিতে চলা নির্মাণকাজ, রাস্তাঘাটের ধুলা এবং কলকারখানার ধোঁয়াও দূষণ বাড়াচ্ছে।
  • ঢাকার বহুদিন ধরেই বায়ুর মান খারাপ হচ্ছে।
  • শুধু শ্যামলী টিবি হাসপাতালেই নয়, সারা ঢাকায়ই শ্বাসকষ্টের রোগী বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
  • ঢাকার বায়ুর মান সাধারণত ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে থাকে।
  • বিশ্বব্যাংকের গবেষণায় বলা হয়েছে, চারটি দেশের ওপর দিয়ে একই মেঘমালা উড়ে যায় যা দূষিত বায়ু ছড়িয়ে দেয়।
  • আন্তসীমান্ত দূষিত বায়ুপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে এখনো পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সালাম বলেছেন, স্থানীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।
  • সরকারের পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসেবেও ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার বায়ুর মান ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ছিল ১৬ দিন।
  • ফেব্রুয়ারি মাসে শ্যামলী টিবি হাসপাতালের ৬ হাজারেরও বেশি রোগী ছিল।
  • আন্তসীমান্ত দূষিত বায়ুপ্রবাহ নিয়ে ২০২২ সালে নেপালের কাঠমান্ডুতে চার দেশের একটি আলোচনা হলেও তা আর এগোয়নি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার বায়ু দূষণের কারণে শহরের বুকে শ্বাসকষ্টের রোগী বাড়ছে। এর প্রমাণ পাওয়া গেছে শ্যামলী টিবি হাসপাতালে। হাসপাতালটির উপপরিচালক ডা. আয়শা আক্তার জানিয়েছেন, রাজধানীর শ্যামলীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের বহির্বিভাগে এখন দৈনিক প্রায় ৫০০ রোগী আসছেন। এই হাসপাতালে শয্যা আছে ১৫০টি। ফেব্রুয়ারি থেকে এর প্রায় কোনোটিই ফাঁকা থাকছে না।

ডা. আয়শা আক্তার বলেন, শীত চলে যাওয়ার সময় মানুষের মধ্যে হাঁচি–কাশিজনিত সমস্যাগুলো বাড়ে। ঋতু পরিবর্তনের সময় এটা স্বাভাবিক। কিন্তু হাঁচি–কাশির সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্টের রোগী যেভাবে পাওয়া যাচ্ছে, তাতে এটা যে বায়ুদূষণজনিত, তা বলাই যায়। শুধু শ্যামলী টিবি হাসপাতালেই নয়, সারা ঢাকায়ই শ্বাসকষ্টের রোগী বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকার বায়ুদূষণ বৃদ্ধির সঙ্গে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির সম্পর্ক আছে বলে মনে করেন ডা. আয়শা। ঢাকার বায়ুদূষণ কমছে না। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজধানীতে বায়ুদূষণের গড় মান আগের সাত বছরের এই মাসের তুলনায় বেড়েছে। এ তথ্য তুলে ধরেছে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)।

ক্যাপসের গবেষণা অনুযায়ী, ২০১৭ থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের গড় মান ছিল ২২১। আর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের বায়ুদূষণ আগের বছরগুলোর ফেব্রুয়ারি মাসের গড় মানের তুলনায় শতকরা ২ দশমিক ১৭ ভাগ বেশি ছিল। এ অবস্থায় বাড়ছে শ্বাসকষ্টের রোগী। এমন পরিস্থিতিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্র : প্রথম আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *