এবার ইয়েমেনে হামলা চালাল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। হুথিদের অন্তত ৩৬টি লক্ষ্যবস্তুতে এই হামলা চালানো হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে ইয়েমেনের এসব হামলা চালানো হয়। খবর রয়টার্স ও সিএনএন।
লোহিত সাগরে আক্রমণে ব্যবহৃত হুথিদেত ভূগর্ভস্থ অস্ত্রাগার, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ সরঞ্জাম এবং আক্রমণে সক্ষম এমন ব্যবস্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন বলেছেন, এই সম্মিলিত পদক্ষেপ হুথিদের একটি স্পষ্ট বার্তা পাঠায় যে, তারা যদি আন্তর্জাতিক নৌ চলাচলের ওপর তাদের অবৈধ আক্রমণ বন্ধ না করে তবে পরিণতি আরো ভয়াবহ হবে।”
গত সপ্তাহে জর্ডানের একটি ঘাঁটিতে আমেরিকান সৈন্যদের উপর হামলার জবাবে এই মার্কিন অভিযান চলছে। ২ ফেব্রæয়ারি যুক্তরাষ্ট্র সেই জবাবের প্রথম ধাপে সিরিয়া ও ইরাকে ৮৫টিরও বেশি ইরানি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়। ওই ঘটনায় প্রায় ৪০ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা সচিব গ্রান্ট শ্যাপস বলেছেন, ইয়েমেনে হুথিদের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা হচ্ছে সাধারণ মানুষের সুরক্ষার জন্য। তিনি বলেন, ‘লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক ও সামরিক জাহাজে হুথিদের আক্রমণ অবৈধ ও অগ্রহণযোগ্য। আর নিরীহ জীবন রক্ষা করা এবং নৌ চলাচলের স্বাধীনতা রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য।’
গাজার অবরোধ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত গোষ্ঠীটি তাদের সামরিক অভিযান চালিয়ে যাবে এবং ইয়েমেনে সর্বশেষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের হামলার জবাব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
হামলার ঘটনার পরপরই হুথিগোষ্ঠীর শীর্ষ সদস্য মোহাম্মদ আল বুখাইতি বলেছেন, ‘হামলার জবাব হামলাতেই দেবো আমরা।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের এক পোস্টে তিনি বলেন, “ইয়েমেনের বেশ কয়েকটি প্রদেশে মার্কিন-ব্রিটিশ জোটের বোমাবর্ষণ আমাদের অবস্থান পরিবর্তন করবে না। আমরা নিশ্চিত করছি যত মূলয়ই দিতে হোক না কেন- গাজায় গণহত্যার অপরাধ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এবং এর বাসিন্দাদের উপর অবরোধ তুলে না নেওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আমাদের সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমাদের যুদ্ধ নৈতিক। আমরা যদি গাজায় নিপীড়িতদের সমর্থনে হস্তক্ষেপ না করতাম, তাহলে মানুষের মধ্যে মানবতা থাকত না। ইয়েমেনের বিরুদ্ধে আমেরিকান-ব্রিটিশ আগ্রাসনের উত্তর দেওয়া হবে। হামলার জবাব হামলাতেই দেবো আমরা।”
এমন হামলা-পাল্টা হামলাকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। হামলার নিন্দা জানিয়ে ইরান এটিকে কৌশলগত ভুল বলে আখ্যা দিয়েছে। বলা হয়েছে, ইরাক ও সিরিয়ায় হামলা চালিয়ে সার্বভৌমত্বের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের চার্টারের লঙ্ঘন করেছে যুক্তরাষ্ট্র।